বোরন সারের অভাবে বিভিন্ন শস্য ও ফলে বোরনের ঘাটতিজনিত নানা রকম সমস্যা দেখা যায়। নিম্নে বোরনের অভাবজনিত লক্ষণগুলো দেওয়া হলোঃ
বোরনের অভাবজনিত লক্ষণসমূহঃ
- বোরন সারের অভাবে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় এবং গাছে ফুল সংখ্যায় কম আসে।
- বোরনের অভাবে সবজি বা ফল গাছের ফুল ঝরা বেড়ে যায়।
- ফল আকারে ছোট হয় এবং ফেটে যায়। এছাড়াও ফলের ( পেঁপে, কাঁঠাল, পেয়ারা ) আকার বিকৃত হয়ে অপরিপক্ক অবস্থায় ফল ঝরে যায়।
- গাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি সেচ দেওয়ার পরও অনেক সময় কচিপাতা নেতিয়ে পড়া অবস্থায় থাকে।
- ফুলকপি ও বাঁধাকপির পাতা সজীবতা হারিয়ে ফেলে এবং ফুলকপির কাডবিবর্ণ হয়ে নষ্ট হয়ে যায়।
- গাছের কাণ্ডের শীর্ষ ভাগ বা গাছের ডগা কালো হয়ে শুকিয়ে যায় বা মরে যায়।
- বোরনের অভাবে মূলা ও বীটের ভিতরে অংশে কালো পচন দেখা যায়। কুমড়ো জাতীয় ফসলের কান্ড ফেটে যায় এবং সূর্যমুখীর ফুলে চিটে দানা হয়ে থাকে।
- তেল ও ডাল জাতীয় ফসলের পডে (সরিষা, মসুর, মটরশুঁটি) দানার সংখ্যা কম যায় এবং দানা অপুষ্ট হয়। এছাড়া বোরনের ঘাটতি বেশি হলে পচনজনিত ক্ষত তৈরি হতে পারে।
- আখের পাতার শীর্ষ ভাগে ও কোনায় পুড়ে যাওয়ার মতো অনুসর্গ পরিলক্ষিত হতে পারে।
- বোরনের ঘাটতি তীব্র হলে গমের শীষে, ভুট্টার মোচায় দানা তৈরি না হওয়া এবং ফুলে পরাগায়ন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়ে বন্ধাত্ব দেখা দিতে পারে।
বোরন সারের কার্যাবলিঃ
- গাছের কোষপ্রাচীর শক্ত করে, শিকড় ও ডগার বৃদ্ধি ঘোটায়।
- গাছের পরাগায়ন ও নিষিক্তকরণে সহায়তা করে।
- বোরন আম, লিচু, কলা ইত্যাদি ফলের ফেটে যাওয়া রোধ করে।
- বোরন সার ফুলের বিকাশ ও ফলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- আলুকে দাঁদ রোগ থেকে রক্ষা করে এবং ধানে চিটা হওয়া ও দাগ পড়া কমে যায়।
- শিম,ডাল ও তেল জাতীয় দানাদার ফলের দানার গঠনে এবং ফলন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
সার প্রয়োগের মাত্রা বা পরিমাণ: সাধারণত ফলগাছে ফুল আসার পূর্বে বোরন সার প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যাবে। ছাদবগানের জন্য ছোট টবে ১/২ চা চামচ, বড় টবে ১ চা চামচ এবং হাফড্রামে ১ টেবিল চামচ দিতে হবে। এক্ষেত্রে টবের উপরের মাটি এক/দেড় ইঞ্চি তুলে টবের ভিতরের মাটির সাথে সার ভালো করে মিশানোর পরে ঐ তুলে রাখা মাটিগুলো ঝুরঝুরে করে ভালোভাবে টবে ঢেকে দিতে হবে।
ফল বৃদ্ধির সময় লিবরেল জিংক বা বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য জিংক ১ গ্রাম/লিটার এবং বোরন বা সলুবোর বোরন (বোরাক্স/ বরিক এসিড) অথবা বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য বোরন সার ২ গ্রাম/ লিটার পানিতে মিশিয়ে ২০-২২ দিন পর প্রথমবার এবং ৪০-৪৫ দিন পর ২য় বার স্প্রে করলে ফল ঝরে পড়া ও ফাটা উভয় সমস্যা কমে যায়।
যেসব গাছে ১২মাস ফল থাকে সেসব গাছে ২মাস পর পর বোরন সার স্প্রে করতে হবে। সেসব গাছ বছরে একবার ফল দেয় ঐ গাছে বছরে ১ বার প্রয়োগ করতে হবে। আবার যেসব গাছে বছরে দুইবার ফল ধরে সেসব গাছে ফুল আসার এক মাস আগে ১ বার বোরন প্রয়োগ করলে সুফল পাওয়া যাবে।
সংগৃহীত
উত্তর সমূহ